সোয়েব সাঈদ, রামু:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেছেন- পর্যটনের পাশাপাশি কক্সবাজারকে প্রযুক্তি নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের মানুষকে তথ্য প্রযুক্তিখাতে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে হাই টেক পার্ক নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। এখন সে প্রতিশ্রæক্তি বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে কক্সবাজার হবে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা তৈরির নতুন গন্তব্য।
শনিবার, ১৬ জুলাই সকাল ৯ টায় কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি এলাকায় ‘হাই-টেক পার্ক’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পরে তিনি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং গাছের চারা রোপন করে ‘হাই-টেক পার্ক কক্সবাজার’ এর নির্মাণকাজের শুভ সূচনা করেন।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন- কক্সবাজারের ভবিষ্যত প্রজন্মের কর্মসংস্থানের বিষয়টি অতীতে কেউ ভাবেনি। এনিয়ে স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যার ফলশ্রæতিতে কক্সবাজারের রামুতে অভাবনীয় সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে হাই-টেক পার্ক নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী অনেক কিছু দিয়েছেন। তাঁর কাছে আমাদের আর চাওয়ার কিছু নেই। গত ৫০ বছরে যা সম্ভব হয়নি, তিনি কক্সবাজারবাসীকে মাত্র ১৩ বছরে তার চেয়ে অনেক বেশী দিয়েছেন।
পরে সকাল সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘১৩ বছর আগে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। আর বর্তমানে তা ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৫ সালে আইসিটি রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলার এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আইসিটি খাতে কর্মসংস্থান ৩০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, জেলার তরুণ-তরুণীরা শুধু একটি ল্যাপটপ নিয়ে এই হাই-টেক পার্কে বসে বিশে^র স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অর্থ আয় করতে পারবে। এই আইটি পার্কে ৩ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিবছর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে আরও ১ হাজার তরুণ-তরুণীর।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি’র সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ জানান, রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি এলাকায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ একর জমিতে এ ‘হাই-টেক পার্ক’ নির্মাণ করা হবে। এতে একটি পাঁচতলা ভবন এবং তাঁর পাশে আবাসনের জন্য একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন থাকবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে পরিপূর্ণ অবকাঠামো তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান (পিপিএম), জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলা) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএএম ফজলুল হক, লার্ণিং এন্ড আর্ণিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক (উপ সচিব) হুমায়ন কবির, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুপ আদনান। অনুষ্ঠানে লার্ণিং এন্ড আর্ণিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রশিক্ষনার্থী সানজিদা রহমান ও ইয়াছির আরাফাত প্রশিক্ষনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাভলম্বী হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২০ জন তরুন-তরুনীকে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
এরআগে সকালে রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়িতে হাই-টেক পার্ক এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা, রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিগ্যান চাকমা, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রীনা, সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, রামু প্রেসক্লাব সভাপতি নীতিশ বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক সোয়েব সাঈদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।